ডাবের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা কম বেশি সকলেই ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানি। তবে অনেকেই আছে যারা ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। তাদের জন্যই আজকের এই পোস্টটিতে আমরা ডাবের উপকারিতা এবং ডাবের অপকারিতা ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন তাহলে আপনি খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা, ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো, ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক, ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে? সেই সকল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।
পোস্টসূচিপত্রঃ

ভূমিকা

আপনারা কি জানেন ডাবের পানির বহু উপকারিতা রয়েছে। এই ডাবের পানি আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। বিশেষ করে ডাবের পানিতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া ডাবের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুস্টি উপাদান যেটি আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে। আর এজন্য আপনারা অনেকেই ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। এ সম্পর্কে আমরা আজকের আর্টিকেলের বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম  | ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা 

আপনারা এই উক্ত সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য অনেক খোজাখুজি করেন। কিন্তু সঠিক তথ্য খুজে পান না। আপনারা যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তারা এখনই এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনারা ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জানতে পারবেন।
  • ডাবের পানি খাওয়ার জন্য সঠিক তেমন কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। তারপরেও আপনি কিছু কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন। আপনি যদি সেই সকল নিয়ম অনুসরণ করে না থাকেন তাহলে এখনই জেনে নিন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
  • আপনি যখন ডাবের পানি খেতে চাইবেন তখন অবশ্যই বিবেচনায় রাখবেন ডবটা যেন কচি ডাব হয়। তা না হলে সেঈ ডাবের যত বয়স বাড়তে থাকবে তাতে চিনির পরিমাণ ও ততই বাড়তে থাকবে। যার ফলে আপই ডায়বেটিসের মতোন স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়তে পারেন।
  • ডাবের পানি খাওয়ার জন্য আপনি যখন ডাবটা কাটবেন ঠিক তখনই খেয়ে নিবে। ডাব কেটে রাখে দিয়ে বেশি দেড়ি কবেন না।
  • আপনি ডাবের পানি যেকোন সময়ে খেতে পারবেন। তবে আপনি যখন রোদ থেকে আসবেন, এসেই সাথে সাথে ডাব খাবেন না। কিছুটা দেরি করে জিরিয়ে নিয়ে তারপর খাবেন।
  • আপনি যখন ডাবের পানি খাবেন তখন তাতে কোন প্রকার চিনি, লবণ অথবা অন্যকিছু মেশানোর চেষ্টা করবেন না।
  • ডাবের পানি কখনো ফুটিয়ে খাওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন না। এতে করে আপনার জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।
আশা করছি আপনারা ডাবের উপকারিতা ও ডাব খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারলেন। তবে এখন জেনে নেওয়া যাক ডাবের পুষ্টিগুন সম্পর্কে।

ডাবের পুষ্টিগুণ কিকি | ডাবের উপকারিতা

ডাবের উপকারিতা আর ডাবের অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য তার পূর্বে আমাদেরকে ডাবের পুষ্টিগুণ কিকি অর্থাৎ ডাবে কিকি উপাদান রয়েছে সেগুলি জানা প্রয়োজন। আপনি যদি ডাবের পুষ্টিগুণ কিকি রয়েছে সে সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক।

ডাবের পুষ্টিগুণ গুলি হলোঃ ( প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের পানির জন্য )
  • তরল পানি রয়েছে ৯৫ শতাংশ
  • মোট খনিজ পদার্থ রয়েছে ০.৩ শতাংশ
  • ক্যালসিয়াম রয়েছে ০.৬৯ শতাংশ
  • আমিষের পরিমান রয়েছে ২.৩ শতাংশ
  • পটাশিয়ামের পরিমাণ রয়েছ ০.২৫ শতাংশ
  • শর্করার পরিমাণ রয়েছে ২.৪ গ্রাম
  • ফসফরিক অ্যাসিডের পরিমাণ রয়েছ ০.৫৬ শতাংশ
  • চর্বির পরিমাণ রয়েছে ০.১ গ্রাম
  • ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইডের পরিমাণ রয়েছ ০.৫৯ শতাংশ
  • নাইট্রোজেনের পরিমাণ রয়েছ ০.০৫ শতাংশ
এই সকল উপাদান ছাড়াও আরো কিছু উপাদান রয়েছে। যেমনঃ ভিটামিন, খনিজ, লৌহ, আঁশ ইত্যাদি।

ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা

ডাব আমাদের অনেক অতি পরিচিত একটি ফাল। এই ফলের গাছ আমাদের বাড়ির আঙিনায় হয়ে থাকে। আপনি যদি নিয়োমিত ডাব খান তাহলে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। ডাব খাওয়ার অনেক উপকারি দিক রয়েছে। তার সাথে সাথে কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। এখন আমরা প্রথমে ডাবের উপকারিতা এবং তার পরে ডাবের অপকারিতা সম্পর্কে জানবো।ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ

ডাবের উপকারিতা গুলি হলো
  • প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের পানিতে ক্যালসিয়ামের পরিমান রয়েছে প্রায় ০.৬৯ শতাংশ। যার ফলে এটি প্রাকৃতিক ভাবে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়।
  • এই ডাবের পানি কে অনেকে প্রাকৃতীক স্যালাইন ও বলে থাকেন। যেইটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি।
  • ডাবের পানিতে পটাশিয়াম রয়েছে ০.২৫ শতাংশ। এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে ০.৫৯ শতাংশ। যা আমাদের কিডনির কার্যক্ষমতা অনেক গুণে বৃদ্ধি করে দেয়।
  • আমাদের শরীরের পানি শুন্যতা হ্রাস করে।
  • আমাদের হজমক্রিয়াতে অনেক সাহাহ্য সহযোগিতা করে।
  • আমাদের শরীরের ওজন বজায় রাখে। ফলে আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।
  • আমাদের ত্বকের আদ্রতা কমাতে সাহাহ্য করে। যার প্রতিশ্রুতিতে আমাদের ব্রণ সমস্যা কম হয়।
ডাবের এতো সকল উপকারি দিক থাকা সত্বেও তার কিছু অপকারি দিক রয়েচে। সব কিছুরই কিছু খারাপ এবং কিছু ভালো দিক থাকে। তেমনি করে ডাবেরও রয়েছে। তাহলে চলুন এখন কিছু ডাবের অপকারি দিক সম্পর্কে জেনে নেই।

ডবের অপকারিতা গুলি হলোঃ 
  • প্রতিদিন নিয়ম করে ডাবের পানি খেলে যেমন উপকার পাওয়া যাবে, ঠিক তেমনি করে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে এটা খেয়ে ফেলেন তাহলে উপকারের থেকে ক্ষতিই বেশি হবে।
  • কেউ যদি খুবই অতিরিক্ত পরিমাণে ডাবের পানি পান করে থাকেন তাহলে কারো কারো ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হওয়ার ও আশংকা থাকে।
  • ডাবের পানিতে কিছু পরিমাণ উপাদান রয়েছে যেগুলো আপনার কিডনিকে সুস্থ্য রাখতে সহায়তা করবে। তবে আপনি যদি কিডনির রোগি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর ডাবের পানি খাবেন।
  • যাদের এতে অ্যালার্জি রয়েছে অবশ্যই তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। আর তা না হলে আপনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরতে পারেন।
  • আবার যারা ঠান্ডার রোগি রয়েছেন তাদের জন্য অবশ্যই একটু বুঝে শুনে ডাবের পানি পান করা উচিত। আর অন্যথায় একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
তাহলে আপনারা ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলেন। এখন আপনারা এই ডাবের পানি নিয়ম অনুযায়ী খাবেন যেগুলো আমরা উপরের অংশে আলোচনা করেছি।

খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা

এমন অনেকেই আছেন যারা সকলে ঘুম থেকে উঠেই চা অথবা কফি পান করেন। আবার কেউ কেউ রয়েছেন যারা এক গ্লাস পানি দিয়ে দিন শুরু করেন। সকালবেলা পানি করা সব থেক উত্তম। তবে অনেক পষ্টিবিদেরা বলেছেন সকালে শুধু পানি পান না করে ডাবের পানি পান করার জন্য। চলুন তাহলে এখন আমরা খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
  • মূলত যেই সকল ব্যাক্তি সকালে ব্যায়াম করেন তাদের কে সকালে ডাবের পানি পানের জন্য বলা হয়ে থাকে। তার কারণ হলো ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস থাকেন। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি উপাদান।
  • ডাবের পানিতে কোন প্রকারের কোন ফ্যাট নেই। তাই যারা আপনাদের শরীরের স্থুলতা নিয়ে চিন্তিত তারা অবশ্যই প্রতিদিন সকালে ডাবের পানি খেতে পারেন।
  • ডাবের পানি আমাদের শরীরের হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে। তাই যেসকল ব্যাক্তিগণ এই রোগে ভুগছেন তারা প্রতিদিনের তাদের খাদ্য তালিকায় ডাবের পানি রাখতে পারেন।

ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক

সকল কিছুরই একটি উপকারি দিক এবং একটি ক্ষতিকর দিক থাকে। তেমনি ডাবের পানির এতো উপাকারি দিক থাকা সত্বেও কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। যেইটা আমদের সকলের স্মরণ রেখে ডাবের পানি খাওয়া উচিত। তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক কাদের জন্য ডাবের পানি ক্ষতিকর হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপঃ যেই সকল ব্যাক্তির উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এটি। কারণ ডাবের পানিতে অনেক পরিমাণে সোডিয়াম রয়েছে। যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ অনেক গুনে বৃদ্ধি করে থাকে।

কিডনির রুগীঃ ডাবে পটাশিয়াম রয়েছে। কডনি অকার্যকর হলে শরীর থেকে পটাশিয়াম বের করতে পারে না। যার ফলে শরীরের কিডনিকে অকার্যকর করে ফেলে। তাই যারা কিডনির নানান রকম রোগে ভুগছেন তাদের ডাবের পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
এলার্জিঃ যারা এলার্জির সমস্যায় আছেন তাদের কে ডাব থেকে বিরত থাকাই ভালো। কারণ ডাব খেলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ র‍্যাশ হতে পারে, অতিরিক্ত পরিমাণে হাঁচি আস্তে পারে, ত্বক লাল হতে পারে, চোখে পান জমতে পারে ইত্যাদি।

ডায়বেটিস সমস্যাঃ ডাবের পানি পানে ক্ষেত্রে অবশ্যই কচি ডাব খেতে হবে। আর না হলে ডাবের বয়স যত বাড়তে থাকে তাতে চিনির পরিমাণ ততই বাড়তে থাকে। এছাড়াও ডাবে আরো রয়েছে কার্বহাইড্রেট ও ক্যালোরি যা অধিক পরিমাণে থাকে। তাই যাদের ডাইবেটিস রয়েছে তাদের ডাব খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে

আপনি যদি নিয়োমিত ডাবের পানি পান করেন তাহলে আপনার প্রেশার অর্থৎ রক্তচাপ না বেরে আরো কমে যাবে। তার মূল কারণ হলো ডাবের পানিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম। যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। আর এই জন্যই হয়তো ডাবের পানিকে প্রাকৃতিক স্যালাইন বলা হয়।
তাই আপনি চাইলে প্রতিদিন নিয়ম করে ডাবের পানি খেতে পারেন। এটি আপনি সকালে হালকা নাস্তা অথবা হালকা ব্যায়ামের পরে খেতে পারেন। অথবা আপনি সকলে খালি পেটে খেতে পারেন।

শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে আপনারা ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই ডাবের পানি আমাদের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। এই রকম তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়তে নিয়োমিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের ইনফো নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url