বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম ( ইসলামী ব্যাংক)
বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম-প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম।আপনারা যারা প্রবাসী ভাই রয়েছেন তারা হয়তো অনেকেই বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। এই রকম আপনিও যদিবিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আমরা এখন কমবেশি প্রায় সকলেই জানি যে, ইসলামী ব্যাংক হলো ডিজিটাল মাধ্যমে টাকা লেনদেন করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। তাই আপনারা সকল প্রবাসী ভাইদের এই বিষয়ে জেনে রাখা উচিত। তাহলে চলুন এখনবিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্র:বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
- ভূমিকা
- রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম
- বিদেশ থেকে নগদে টাকা পাঠানোর নিয়ম
- বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়
- বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি
- সাধারণ জিজ্ঞাসা
- শেষ কথা
ভূমিকা:বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
প্রবাসী ভাইদের বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর দুর্ভোগ কমানোর জন্য ইসলামী ব্যাংক ইতিমধ্যে একটি নিয়ম চালু করেছেন। পূর্বে আই সুবিধাটি বিকাশ চালু করে। এরই পরিপেক্ষিতে ইসলামী ব্যাংকে গ্রাহকগণেরা ও এমন একটি সুবিধা চেয়ে আসছিলো। তাই নগদ তাদের গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই পদ্ধতিটি চালু হওয়ার জন্য বিদেশ থেকে সকলেই এখন বৈধভাবে দেশে
টাকা পাঠাতে পারবে।আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে আপনি বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি, বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন তাহলে এখন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম
রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম জানার আগে আমাদের সকলকেই রেমিট্যান্স কি সে বিষয়ে জানা প্রয়োজন। রেমিট্যান্স হলো সেই অর্থ যখন কোন প্রবাসী কর্মি তার দেশের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে যে টাকা পাঠান সেই অর্থই হলো দেশের জন্য রেমিট্যান্স। একজন প্রবাসী ব্যক্তি যখন তার কষ্টে অর্জিত টাকা দেশে পাঠান তখন সেই টাকা যখন তার পরিবার ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন তখন কিছু পরিমাণ চার্য কেটে নেওয়া হয়।
এই চার্যকৃত টাকার পরিমাণই হলো দেশের সরকারের কাছে রেমিট্যান্স এর একটি কিছু পরিমাণ অংশ। বিদেশে কর্মরত ভাইয়েরা এই সম্পর্কে জানতে চান। আপনি ও যদি এমন হয়ে থাকেন অথবা এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এখই জেনে নেওয়া যাক। আপনি যদি বিদেশ থেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে চান তাহলে আপনাকে যা যা করতে হবেপ্রথমে আপনি আপনার নিকটস্থ এক্সচেঞ্জ
হাউজ খুজে বের করে সেখানে পৌছাবেন।সেখানে পৌছে আপনি আপনার দেশে টাকা পাঠাবেন সেই বিষয়ে তাদেরকে জানাবেন।এরপর তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করবে আপনি কত টাকা পাঠাতে ইচ্ছুক। আপনি তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরে তারা আপনাকে একটি কেওয়াইসি ফরম দিবে।আপনি সঠিকভাবে আপনার কেওয়াইসি ফরম পূরণ করে দিবেন।এখানে ভুল তথ্য দিলে আপনার টাকা পাঠাতে
সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি সঠিক তথ্য দিয়ে ফরম টি পূরণ করে দিবেন। যাতে আপনাকে পরবর্তিতে কোন সমস্যায় পরতে না হয়।এখানে যদি আপনি তাদের ভুল তথ্য প্রদান করেন তাহলে আপনার পেমেন্ট হোল্ড করে রাখা হবে। তাতে করে আপনারই অনেক সময় নষ্ট হবে।এরপর আপনার সকল তথ্য সঠিক থাকলে আপনার দেওয়া নির্দিষ্ট ব্যাংকের ঠিকানায় আপনার টাকা ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
বিদেশ থেকে নগদে টাকা পাঠানোর নিয়ম
অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল ভিত্তিতে টাকা লেনদেন করার একটি অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো নগদ। নগদ সাম্প্রতিক তাদের একটি ফিচারের কথা উল্লেখ করেছে। তারা বিদেশ থেকে দেশে টাকা নিয়ে আসার ব্যাপারে একটি ঘোষণা প্রদান করে। এই ফিচারটি প্রথমে বিকাশ নিয়ে আসে। তারপর নগদ তাদের গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে তাদের এই উক্ত সুবিধাটি চালু করে।এখন নগদের মাধ্যমে বিদেশ
থেকে খুব সহজেই দেশে টাকা পাঠানো যাবে। একজন প্রবাসী হিসেবে আপনি যদি বিদেশ থেকে নগদে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে জেনে না থাকেন তাহলে অবশ্যই জেনে নিন। এটি আপনার জন্য অনেক কাজে দিবে। এবং এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে খুব সহজেই আপনার টাকা পাঠাতে পারবেন।বিকাশের মতো নগদও এখন তাদের ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানের
মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক সুব্যাবস্থা করে দিয়েছে। নগদের মধ্যমে আপনি দেশের বাহিরে হতে দেশে টাকা পাঠাতে নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন।আপনি যে অবস্থান করছেন সর্বপ্রথম আপনি সে দেশের নগদের সাথে পার্টনারশিপে রয়েছে এমন সেবাদাতা আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করবেন। এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করে আপনি তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করবেন।আপনি
মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে নগদের সেবা গ্রহণ করার জন্য Authorize ব্যাংকের এজেন্ট এর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন তাহলে তারা আপনাকে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য যে সকল পদ্ধতি রয়েছে সকলকিছু আপনাকে বুঝিয়ে দিবে।দেশে টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি বেনিফিসারী রকেট একাউন্ট নাম্বার তাদের কে প্রদান করতে হবে।উক্ত নাম্বার প্রদান করার ক্ষত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন আপনি যে
নাম্বার তাদেরকে প্রদান করছেন, সেই নাম্বার অবশ্যই আপনার দেশে চালু থাকতে হবে।এরপর আপনি আপনার দেশে কি পরিমাণ টাকা পাঠাতে চান এবং যে নাম্বারে টাকা পাঠাতে চান সেই ব্যাক্তির নাম নাম্বার সঠিকভাবে মানি এক্সচেঞ্জ এজেন্টের নিকট প্রদান করুন।নগদ একাউন্ট ব্যাবহারকারির নাম, নগদ নাম্বার সঠিকভাবে প্রদান করুন। সকলকিছু সঠিক থাকলে তারা যে টাকা পাঠিয়েছে তা আপনাকে
বেনিফিশিয়ারি এজেন্টকে টাকা পাঠানো হয়েছে, এমন বলে নিশ্চিত করবে।বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে ট্রানজেকশন অ্যামাউন্ট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তাই আপনি যখন টাকা পাঠাবেন তখন অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন আপনি নির্ধারিত ট্রানজেকশন অ্যামাউন্ট অতিক্রম করেছেন কিনা।দেশের
বাহির হতে দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষত্রে আপনাকে বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন আপনি আপনার দেশে যে ব্যাক্তি বা যার কাছে নগদ একাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন তার কাছে রেজিস্টার্ড অথবা ভ্যালিড নগদ একাউন্ট আছে কিনা সে বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়
বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায় অনলাইন মাধ্যমে এই সকল বিষয়ে অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা প্রশ্ন করে থাকেন। আপনারা অনেক প্রবাসী ভাই রয়েছেন তারা এই বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু অনেক খোজাখুজির পরেও সঠিক তথ্য খুজে পান না। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। তাহলে
চলুন এখন আমরা সকলেই জেনে নেই বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ কত টাকা পাঠানো যায়।আপনি যদি একজন প্রবাসী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি বিদেশ থেকে দেশে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১,২১,৯৫১ টাকা পাঠাতে পারবেন। আর আপনি মাসিক সর্বোচ্চ ৪,৩৯,০২৪ টাকা পাঠাতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনার দেশে প্রেরিত অর্থের সাথে ২.৫% সরকারী ভ্যাট/প্রণোদনা যক্ত হবে।
বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি
আপনারা যারা প্রবাসী ভাইয়েরা আছেন তারা প্রতিমাসেই কিছু পরিমাণ টাকা দেশে পাঠিয়ে থাকেন। আর টাকা পাঠানোর সময় আমরা সকলেই চিন্তা করি যে কিভাবে টাকা খুব দ্রুত পাঠানো যায়। যত দ্রুত টাকা পৌছানো যাবা ততদ্রুত আমরা নিশ্চিন্ত হবো। আমরা সকলেই চাই টাকাটা যেন খুব দ্রুত পৌছায়।
আর এই টাকা পাঠানোর সবথেকে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর দ্রুততম মাধ্যম কোনটি আমরা সেটা
জানি না। তাই আমরা সকলেই কিছু বিভ্রান্তের মধ্যে থাকি। আপনি যদি দ্রুত টাকা পাঠাতে চান তাহলে এই কয়েকটি মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন। এই কয়েকটি মাধ্যমে অন্য সকল মাধ্যম থেকে অনেক দ্রুত টাকা পৌছায়। এবং খরচ ও অনেক স্বল্প পরিমাণ। দ্রুত টাকা পৌছানোর মাধ্যমগুলি হলো
ওয়েস্টার্ণ ইউনিয়ন এর মাধ্যমে টাকা প্রেরণ
বিকাশ এর মাধ্যমে টাকা প্রেরণ
- ইভিএম ( EVM )
- ইএমআর ( EMR )
- এমটিসি ( MTC )
- ইএমটিএস ( EMTS )
সাধারণ জিজ্ঞাসা
প্রশ্নঃ বিদেশ থেকে টাকা আসতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তরঃ বিদেশ থেকে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা আসতে সর্বোচ্চ ২-৩ দিন সময় লাগে।
প্রশ্নঃ আন্তর্জাতিক ব্যাংক স্থানান্তর কিভাবে কাজ করে?
উত্তরঃ আন্তর্জাতিক মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা সাধারণত একটি আন্তর্জাতিক মান ব্যবহার করে করা হয় যা SWIFT নেটওয়ার্ক নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ বিদেশে টাকা স্থানান্তর করতে ব্যাংক চার্জ কত?
উত্তরঃ বিদেশে টাকা স্থানান্তর করতে ব্যাংক চার্জ আপনার মোট টাকা ট্রান্সফারের ৩-৪%
প্রশ্নঃ বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে স্থানান্তর করতে কত সময় লাগে?
উত্তরঃ বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে স্থানান্তর করতে ৪-৫ দিন সময় লাগে।
শেষ কথা:বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো বিদেশ থেকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার মাধ্যমে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। এই রকম তথ্যবহুল আর্টিকেল নিয়োমিত পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আর্টকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।