অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল রুট করার ১১টি সুবিধা ও অসুবিধা জেনে নিন

আপনার অনেকেই রুট সম্পর্কে জেনেছেন।আর্টিকালিতে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার উপায়। এছাড়াও আপনারা আরো জানতে পারবেন এন্ড্রয়েড ফোন রুট করার সুবিধা ও অসুবিধা। আপনি যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি রুট করতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল রুট করার ১১টি সুবিধা
আপনারা যদি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার সুবিধা ও অসুবিধা কি কি পাওয়া যায় না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আজকে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল তথ্য জানতে পড়তে থাকুন।

ভূমিকা

একটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস রুট করার মাধ্যমে সুপার-ইউজার অ্যাক্সেস লাভ করা যায়। এন্ড্রয়েড ফোন রুট করার মাধ্যমে আপনি আপনার ডিভাইসের সিস্টেম ফাইল মডিফাই এবং বিভিন্ন সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবেন যা ফোন রুট করা ছাড়া সম্ভব নয়। একটা কথা অবশ্যই মনে রাখবেন রুট করার ফলে আপনার ফোনের ওয়ারেন্টি বাতিল হয়ে যাবে

এছাড়াও আপনি যদি ভুল ভাল ভাবে রুট করে থাকেন তাহলে আপনার ফোনের সফটওয়্যার সমস্যা এবং মোবাইল ফোন ব্রিক হতে পারে। আপনার ডিভাইস রুট করার আগে, সব সময় আপনার ডেটার একটা ব্যাকআপ নিয়ে রাখবেন। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার উপায় রয়েছে যা আমার এই পোস্টে জানতে পারবো।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার সুবিধা

মোবাইল ফোন রুট করার ফলে সিস্টেমেটিক অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়, আবার এটা মনে রাখতে হবে রুট করার ফলে কিছু সমস্যা হতে পারে সেগুলো আমরা পরে জানতে পারবো। যা রুট করা ছাড়া সম্ভব নয়। আজকে আমরা রুট করার সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবো। নিচে রুট করার সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
  1. যে ব্যবহারকারীদের রুট অ্যাক্সেস আছে তারা তাদের ডিভাইসে কাস্টমাইজড রম বা অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম সেট আপ করতে পারেন। এর ফলে আপনি আপনার পছন্দের ফোনটিতে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমাইজড করতে পারবেন। এছাড়াও আপনারা আপনাদের ফোনের এন্ড্রয়েড ভার্সনকে আপডেট করতে পারবেন কাস্টম রম ইন্সটল করে।
  2. আমাদের ফোনে অনেক সময় দেখবেন অতিরিক্ত অ্যাপস থাকে যা ফোনের জায়গা বা স্টোরেজ দখল করে থাকে। এরূপ অতিরিক্ত অ্যাপস বা ব্লোটওয়্যার আপনি রুট করার মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় এবং আনইন্সটল করতে পারবেন।
  3. মোবাইল ফোন রুট করার ফলে আপনি আপনার ফোনের পারফরম্যান্স কে উন্নত করতে পারেন। এজন্য আপনি বিভিন্ন ধরনের কাস্টম রম এবং সিস্টেম সেটিং চেঞ্জ করে করতে পারবেন।
  4. কিছু কিছু অ্যাপস রয়েছে যাদের সম্পূর্ণ কাজ করার জন্য রুট এক্সেস এর প্রয়োজন হয়। রুট এক্সেস ছাড়া সম্ভব নয়। যেমন ঃWPS অ্যাপস ভালোমতো কাজ করার জন্য রুট এক্সেস প্রয়োজন হয়। আপনারা সবাই জানেন এই অ্যাপস ব্যবহার করে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড বের করা যায়।
  5. ফোনে রুট করার ফলে আপনি আপনার ফোনে বিরক্ত করে এড গুলো রিমুভ করতে পারবেন অর্থাৎ এড ব্লকার ইনস্টল করতে পারবেন যার সাহায্যে ফোনে আসে এড গুলো ব্লক করা যাবে।
  6. রুট করার ফলে মোবাইল ফোনের সিপিইউ এর কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখে ফলে মোবাইল ফোনে একটা ভালো ব্যাটারি ব্যাক পাওয়া যায়।
  7. শুধুমাত্র রুট-অ্যাপ এবং পরিবর্তনের মাধ্যমে, ব্যবহারকারীরা পাওয়ার-সেভিং ফিচার এবং অপ্টিমাইজেশন প্রয়োগ করতে পারে যা ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে পারে।
  8. রুটিং কাস্টম কার্নেল ইনস্টল করার অনুমতি দেয়, যা ডিভাইসের কর্মক্ষমতা, ব্যাটারি লাইফ এবং অন্যান্য কার্যকারিতা আরও উন্নত করা যায়।
  9. আপনার ফোনে আপনি নতুন নতুন ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন যা উচ্চ এন্ড্রয়েড ভার্সন ছাড়া ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
  10. এছাড়া ডিভাইসের অর্থাৎ আপনার ফোনের ব্যাটার পারফরমেন্স উন্নত করে এবং আপনি ব্যাটারি ব্যাকাপ বেশি পাবেন।
  11. আরো অনেক ফিচার যেমন যাদের ফোনে জি ক্যাম ইনস্টল করা যায় না তারা রুট করার মাধ্যমে আপনাদের ফোনে জি ক্যাম ইন্সটল করতে পারবেন। ফলে অতি সহজে আপনারা ফটোগ্রাফি করতে পারবেন।
তাহলে সকলে জানতে পারলেন ফোন রুট করার সুবিধা সমূহ পরে আরো জানব রুট করার অসুবিধা সমূহ নিয়ে। নিচে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হল।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার অসুবিধা

ফোন রুট করার কিছু অসুবিধা রয়েছে যা আমাদের সকলের জানা উচিত রুট করার আগে। চলুন জেনে আসি ফোন রুট করার অসুবিধা গুলো।
  • রুট করা আপনার ডিভাইসের ওয়ারেন্টি বাতিল করতে পারে। বেশিরভাগ ফোন নির্মাতারা রুট করাকে তাদের পরিষেবার শর্তাবলীর লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচনা করে এবং তারা রুট করা ডিভাইসগুলির জন্য সমর্থন বা মেরামত প্রদান করতে অস্বীকার করতে পারে।
  • রুট করা ডিভাইসটিকে সম্ভাব্য নিরাপত্তা দুর্বলতার জন্য উন্মুক্ত করে। একবার রুট করা হলে, ডিভাইসটি ম্যালওয়্যার, ফিশিং আক্রমণ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা হুমকির জন্য বেশি সংবেদনশীল, কারণ এটি কিছু অন্তর্নির্মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বাইপাস করতে পারে।
  • সিস্টেম ফাইল এবং সেটিংস পরিবর্তন করা সফ্টওয়্যার অস্থিরতা হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এর ফলে ডিভাইসটি প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে যেতে পারে, ক্র্যাশ হতে পারে বা এমনকি স্থায়ীভাবে অব্যবহারযোগ্য (ব্রিকড) হয়ে যেতে পারে।
  • রুট করার ফলে কিছু ডিআরএম সুরক্ষার ক্ষতি হতে পারে, যা কপিরাইটযুক্ত সামগ্রীর অননুমোদিত অনুলিপি এবং বিতরণ রোধ করতে স্ট্রিমিং পরিষেবা, ভিডিও প্ল্যাটফর্ম এবং অ্যাপ দ্বারা ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া আরো অসুবিধা হতে পারে। এখন আমরা জানবো ফোন রুট করলে কি ক্ষতি হয়। আমার ইতিমধ্যে জেনে এসেছি কিভাবে ফোন রুট করতে হয় অর্থাৎ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার উপায়।

ফোন রুট করলে কি ক্ষতি হয়

ফোন রুট করা হলে আপনার ডিভাইসে যদি ওয়ারেন্টি থেকে থাকে তাহলে সেটি বাতিল হয়ে যাবে। আপনি এই ওয়ারেন্টি থেকে কোন প্রকার ফ্রি সার্ভিস আর গ্রহণ করতে পারবেন না। তাই দেওয়ার আগে অবশ্যই জেনে নেবেন ওয়ারেন্টি পলিসি গুলো।কিছু নিরাপদ পরিষেবা, যেমন ব্যাঙ্কিং অ্যাপ এবং পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, রুট অ্যাক্সেস সনাক্ত করতে পারে এবং সুরক্ষা উদ্বেগের কারণে রুট করা ডিভাইসগুলিতে এই অ্যাপস গুলো কাজ করে না। আপনার ডিভাইসটি আনরুট করা সম্ভব হলেও, প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে এবং সবসময় সফল নাও হতে পারে।

উপরন্তু, unrooting ডিভাইসটিকে তার আসল অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় না।রুট করার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ না করা হলে, এটি একটি "ব্রিকড" ডিভাইসের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যার অর্থ এটি সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর হয়ে যায়। অনেকগুলো অ্যাপস আছে যা আপনার ডিভাইসে কাজ নাও করতে পারে কারণ তারা ডিটেক্ট করতে পারে আপনার ফোনে রুট ইনস্টল আছে। তাই অবশ্যই রুট করার আগে এই ক্ষতিগুলো নজরে রাখবেন।

আমাদের শেষ কথা 

আশা করি আপনারা আপনাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। আপনারা জানতে পেরেছেন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন রুট করার উপায় এছাড়া আরো জানতে পেরেছেন রুট করার সুবিধা অসুবিধা যা আমাদের রুট করার আগে জানতে হবে। আর্টিকেলটিতে আপনার সকল সমস্যা সমাধান হয়ে থাকলে অবশ্যই পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আর এমন নিত্য প্রয়োজনীয় আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url