পড়াশোনা করার নিয়ম - পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় জানুন
পড়াশোনা আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় ।কেননা পড়াশোনা ছাড়া ভালো মানুষ,ভালো জাতি হওয়া যায়না এবং জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে পড়াশোনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।কিন্তু পড়তে কারো ভালো লাগে না এবং অনেকক্ষণ পড়ার পর পড়া সহজে মনেও পড়ে না ।কারণ পড়াশোনা করার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা ।
অনেকেই প্রশ্ন করেন কিভাবে পড়লে ভালো রেজাল্ট করা যায় ,পড়াশোনা করার সঠিক নিয়ম কি, দিনে কয় ঘন্টা পড়া উচিত ।তাই এগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে আজকে পোস্টটি ।কিছু নির্দিষ্ট টেকনিক ফলো করার মাধ্যমে আপনি পড়াশোনা খুব সহজেই মনে রাখতে পারবেন ,তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
সূচিপত্রঃ
পড়াশোনা করার নিয়ম
সঠিক পড়াশোনা করার নিয়ম হল কোনো কিছু পড়ার সময় ইমাজিন করা ।অর্থাৎ আপনি কাল্পনিকভাবে সে জিনিসটি কে মনে রাখার চেষ্টা করবেন ।যেমন ধরুন আপনি যখন কোন মুভি দেখেন সিনেমা দেখেন ,আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় মুভিটির এই সিনে কি ছিল আপনি গড় গড় করে বলে দিতে পারবেন ।কিন্তু পড়াশোনা কোন অংশ জিজ্ঞেস করলে আপনি সেটি বলতে পারবে না।মানুষের ব্রেনের দুইটি মেমোরি থাকে একটি হল লং টার্ম মেমোরি আরেকটি হলো সর্ট টার্ম মেমোরি ।
লং টার্ম তে যেসব জমা হয় সেসব স্মৃতি আমরা সহজে ভুলিনা। অপরপক্ষে সর্ট টার্ম মেমোরিতে সেগুলো জমা হয় যেগুলো আমরা মনে রাখতে চাই না ।যেমন ধরেন রাস্তা দিয়ে পথ চলছেন এবং আপনি কিছুই মনে রাখছেন না ইচ্ছা করে ,এগুলো সর্ট টার্ম মেমোরিতে জমা হয়।তাই এই সর্ট টার্ম মেমোরি থেকে আমাদেরকে লং টার্ম মেমোরিতে রূপান্তর করতে হলে আমাদেরকে কিছু কিছু ট্রিকস বা টেকনিক খাটাতে হবে।
পড়াশোনা মনে রাখার উপায়
- পড়ার সময় খাতা কলম মার্কার সঙ্গ নিয়ে বসুন।
- গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছু মুখস্থ করতে হলে সেটিকে মার্কার দিয়ে চিহ্নিত করুন।
- কোনো কিছু মুখস্থ করতে হলে সাথে সাথে খাতায় লিখুন।
- যেটি পড়ছেন সেটি জোরে জোরে পড়ার চেষ্টা করুন যেন সেটি ডান কান দিয়ে প্রবেশ করে।
- যে জিনিসটি পড়ছেন বা মুখস্ত করছেন সেটি ইমাজিন করুন।
- প্রতিটি পড়া মুখস্ত করার ক্ষেত্রে বুঝে বুঝে পড়ুন এতে মন রাখতে সহজ হয়।
- একবার দেখে পড়া হয়ে গেলে সেটিকে না দেখে একা একা বলার চেষ্টা করুন।
- লেখার পর আপনার সেই পড়াটা মুখস্থ হয়েছে কিনা পুনরায় না দেখে লিখুন।
- কোন জিনিস মুখস্ত করার পর প্রত্যেকদিন সেটিকে একবার হলেও পড়ুন যেন আপনার মুখস্ত পড়া মেমোরিতে থেকে যায় ।
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়
- পড়ার সময় আজে বাজে চিন্তা করবেন না।
- পড়ার জন্য শান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবে যেন কোন রকম আওয়াজ বা কথাবাত্রা আপনার কানে না যায়।
- পড়ার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন আপনার মনোযোগ নষ্ট করে দেবে।
- এক ঘন্টা পর পর 5 10 মিনিট বিশ্রাম নিন পানি খান এবং হাঁটাহাঁটি করে আবার এসে পড়তে বসুন।
- নিয়মিত পড়তে বসার অভ্যাস গড়ে তুলুন যেন আপনি একঘন্টা হলেও বই নিয়ে বসবেন এটি নিজেকে প্রতিজ্ঞা করুন।
- পড়ার সময় পড়ার টেবিল ছাড়া কখনও বিছানা বা আরামদায়ক কোন জায়গায় বসে পড়বেন না ।
কিভাবে পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট করা যায়
দিনে কয় ঘন্টা পড়া উচিত
দিনে কত ঘন্টা পড়বেন ?এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে হলে বলব আপনার যতক্ষণ পর্যন্ত মনে হবে যে আপনি আপনার সারাদিনের পড়া সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন। আপনি নিজে সন্তুষ্ট অর্থাৎ আপনার যতক্ষণ না মনের সন্তুষ্টি আসে ততক্ষণ আপনি পড়বেন ।অনেকেই আছে যাদের কোন জিনিস দুই ঘন্টায় মুখস্থ হয়ে যায় কারো একই জিনিস মুখস্ত করতে চার-পাঁচ ঘণ্টা লাগে ।
অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার আয়ত্তে আসে আপনি যখন পড়তে থাকবেন তবে নিয়মিত পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ ঘন্টা পড়াশোনা করলেই যথেষ্ট ।এটি নির্ভর করবে আপনি কোন ক্লাসে পড়াশোনা করছেন এবং কি নিয়ে প্রিপারেশন নিচ্ছেন।
পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়
পড়া মনে রাখার উপায় নিয়ে বলতে হলে ইসলামিক দৃষ্টিতে কিছু কথা না বললেই নয় । তো পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় সম্পর্কেও আপনাদের কিছু বলি ,যেমন পড়ার সময় আপনি কিছু দোয়া পাঠ করতে পারেন ।যে দোয়া পাঠ করলে আপনি উপকার পেতে পারেন সেটি হলঃ
"রাব্বি জিদনি ইলমা"-অর্থ হে সৃষ্টিকর্তা আপনি আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন
এই দোয়াটি আপনি যখন তখন পাঠ করতে পারেন পড়তে যাওয়ার আগে অথবা যখন তখন। এছাড়াও আপনি খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে পড়তে বসার চেষ্টা করবেন ।কেননা সকালে সবকিছু শান্ত থাকে এবং পরিবেশ মনোরম থাকে এবং মানুষের ব্রেন ফ্রেশ থাকে ।তাই আপনি সেই সময় কোনো কিছু মুখস্থ করার চেষ্টা করলে আপনার সে জিনিসটি মাথায় খুব তাড়াতাড়ি এবং দীর্ঘক্ষন থাকে।
আরও পড়ুনঃ রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার
সবশেষে আপনাদেরকে একটি কথা বলব ,মহান আল্লাহতালা সকলকে জ্ঞান দান করেছে সুতরাং সকলেই জ্ঞানের অধিকারী ।কারো মুখস্ত করার ক্ষমতা কম কারো বেশি তবে কেউ কম নয় ।কাউকে বেশিক্ষণ পড়তে হয় কেউ বা অল্প পরেই তার সমস্ত কিছু মুখস্থ হয়ে যায় ।সুতরাং ধৈর্য হারা না হয়ে প্রতিদিন অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনারা যেকোনো পড়া মনে রাখতে পারবেন।