মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

মেডিটেশন সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি ।মেডিটেশন মানুষের শরীরকে চাপমুক্ত ,স্থির এবং মানুষের মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ।এছাড়াও এর মাধ্যমে মানুষের শরীরের অক্সিজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে ,মন-শরীর ভালো থাকে এবং যে কোন কাজে মনোযোগ আনতে সাহায্য করে।সবকিছুরই ভালো-মন্দ দিক থাকে তেমনি মেডিটেশন এরও আছে ।

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

যেমন শরীর মনের জন্য ভালো অপরদিকে মেডিটেশন এর ক্ষতিকর দিক রয়েছে । মেডিটেশন করার সময় করার আগে অবশ্যই আপনাকে মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানতে হবে ।এছাড়া মেডিটেশন কখন করতে হয় এটিও জানা দরকার ।তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে মেডিটেশনের উপকার দিক নয় বরং এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে বলবো।

সূচিপত্রঃ

মেডিটেশন কি

মেডিটেশন হল ধ্যান সাধনা যা নিজের আত্মার বা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করা হয়ে থাকে ।আমরা যেমন শারীরিক ব্যায়াম করি শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, শরীর দিয়ে ঘাম ঝরে ,বিভিন্ন হরমোন বৃদ্ধি ঘটে যার ফলে রক্ত চলাচল বেড়ে যায় ।ঠিক তেমনি মেডিটেশন শরীর ও মনকে একদম শান্ত করে দেয় এবং কোন কিছুতে মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে যার ফলে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ ,দুশ্চিন্তা, শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ ইত্যাদি হতে মুক্তি দানে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার

মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

মেডিটেশন করার আগে প্রত্যেকেরই মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। মেডিটেশনের ফলে যে ধরনের ক্ষতি বা সমস্যা মানুষের শরীরে হতে পারে বা মানুষের জীবনে ঘটতে পারে সেগুলি হলঃ

মাথাব্যথা

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

আপনি যদি জোর জবরদস্তি মেডিটেশন করতে থাকেন আপনার মাথায় প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে ।এছাড়াও আপনি জোরপূর্বক নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেডিটেশন করতে থাকলে আপনার শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে যে আপনি আস্তে আস্তে টের পাবেন।

কাল্পনিক চিন্তাভাবনা

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

আপনি যদি মেডিটেশন শুরু করেন ;সেক্ষেত্রে আপনি কিছুদিন পর আপনার শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন এবং কাল্পনিকভাবে আপনি অনেক কিছু ভাবতে থাকবেন ,যাকে হ্যালুসুলেশন বলা হয় ।অর্থাৎ আপনার মনের মধ্যে সবসময় এমন কিছু কাল্পনিক বিষয় বা ভয়ংকর কোন চিত্র বা কাল্পনিক বস্তু মনের মধ্যে সব সময় ভাসতে থাকবে ,যা বাস্তব এবং প্রাকৃতিক নয়।

অহংকার হওয়া

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

অহংকার কমবেশি আমাদের সকলের মধ্যেই থেকে থাকে ,তবে আপনি যদি ভুল মেডিটেশন করেন নিজেকে স্পেশাল অনুভব করেন অন্যদের থেকে ,যেমন ধরেন ;আপনি কোন মানুষের সাথে কথা বলছেন সে মানুষটি আপনার থেকে কোন কারনে পিছিয়ে আছে তখন আপনি তার সাথে কথা বলার সময় নিজের মধ্যে অহংকার বোধ করবেন।যা খুবই খারাপ এবং সঠিক নয় ।সুতরাং ভুলভাবে মেডিটেশন করার ক্ষেত্রে আপনার মনে প্রচুর অহংকার সৃষ্টি হবে।

অপমানিত হওয়া

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

আমরা আমার জীবনে এমন কিছু জিনিস করে থাকি যা আমরা করতে পারি না বা করেও আমাদের জীবনে কোন কাজে আসবে না ।যেমন ধরেন অনেকে অন্যের দেখাদেখি সেরকম হতে চাই ,যেমন তার ঐ রকম হেয়ার স্টাইল , সেই রকম পোশাক পড়তে চাই এবং তাদের ফলো করতে চাই কিন্তু আসলে তাদের মতো হতে পারে না বরং মানুষের কাছে অপমানিত এবং হাসির পাত্র হয়ে যায়।

পরিবারের প্রতি দায়িত্বহীনতা

যারা মেডিটেশন করেন তার অনেক সময় বাসার বা তার পরিবারের প্রতি কোন দায়িত্ব পালন করতে চান না । তারা মনে করেন মেডিটেশন করে তারা অনেক বড় কাজ করছে এবং তার নিজেকে এত বড় মনে করেন যে বাড়ির কোন কাজ না করে সারাদিন নিজেকে ভবঘুরের মত করে রাখেন ।
মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

এবং পরিবারে যখন কোন কাজ বলা হয় ,তখন সে বলতে থাকবে মেডিটেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের থেকে তার কাছে আর কোন কিছুই নেই ।এবং কোন কিছুতেই তার কোন কিছু যায় আসে না এমন ধরনের মানুষ তার পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে যায় এবং পূর্বের মানুষের সাথে তার সম্পর্ক খারাপ হয়

কারো গোলাম হয়ে যাওয়া

অন্যের কথা শুনে অনেকে মেডিটেশন করে ,যেমন কেউ যদি বলে এই মেডিটেশন করলে জিনিসটি পাবে ।বা উদ্দেশ্যটা সফল করতে পারবে তখন তাকে মান্য করে সবকিছু করে বসে, এমনকি তখন সে হয়ে যায় তার গুরু অর্থাৎ তার কথাই সব কিছু শোনে , তার কথামতো সবকিছু ইমাজিন করে এবং তার কথা মতই চলাফেরার চেষ্টা করে।
মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

অন্যের কথা শুনে কাজ করতে গিয়ে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে সুতরাং অন্যের কথা শুনে মেডিটেশন করলে তার গোলামী করতে হয় ।নিজের কোন মতামত থাকে না এবং সে মানুষটি পুরোপুরি তার সেই গুরুর নির্দেশ পালন করে।

হাসির পাত্র হাওয়া

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

যে ব্যাক্তি মেডিটেশন করে এবং সে যদি গভীরভাবে সেটির ভিতরে ঢুকে যায় এবং সবকিছু আর পাঁচটা মানুষের থেকে ভিন্ন রকম করতে থাকে ।যা বলে সব কিছু আধ্যাত্মিক কথাবার্তা এবং মানুষকে যখন সে বুঝাতে চায় যে তার ইমাজিনেশন এ বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে বা বিভিন্ন ধরনের পজেটিভ নেগেটিভ ঘটনা সম্পর্কে ;তখন মানুষ তার দিকে তাকিয়ে থেকে তাকে পাগল মনে করে । তাকে সমাজ থেকে আলাদাভাবে দেখে

হতাশাগ্রস্ত হয়ে যাওয়া

মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

মেডিটেশন করার পর যদি কোন ব্যক্তি স্থির করে নেয় যে তার সে জিনিসটা সে পাবে ।পরবর্তীতে যদি না পায় তখন চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরে ।কোন কিছুতে তার ভালো লাগে না এবং তার যে জ্ঞান সেটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ।পরবর্তীতে সে তার জ্ঞানকে আর কাজে লাগাতে চায় না এবং সে মেনে নেয় যে আর কোন কিছু করে সে জিনিসটি পাওয়ার সম্ভাবনা সাফল্য অর্জন করা সম্ভব নয়।

মেডিটেশন কখন করতে হয়

মেরিটিশন যেহেতু ধৈর্য সাধনা এবং মন স্থির ভাবে করতে হয় ।সুতরাং মেডিটেশন এমন এক জায়গায় করা উচিত যেখানে কোনরকম কোলাহল, আওয়াজ না আসে ।আর সাধারণত খুব ভোর বেলায় পরিবেশটা শান্ত এবং কোলাহলমুক্ত থাকে।সুতরাং মেডিটেশন করার সঠিক সময় ভোরবেলা। 
মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

যেন আপনি মেডিটেশন করার সময় কোন রকম আওয়াজ বা ব্যস্ত পরিবেশে না থাকে ,তাহলে আপনার মেডিটেশন ঠিকঠাক হবে না । করে কোন লাভ হবে না তাই মেডিটেশন ,যোগাসন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই সকাল টাইম তাই বেছে নেওয়ার জন্য বলবো।

যেহেতু মেডিটেশন একটি খুবই ভালো জিনিস। যদি আপনি এদিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার শরীর মন সব সময় সুস্থ ও সুন্দর থাকবে ।এবং আপনি বিভিন্ন মানসিক মানসিক চাপ মুক্ত থাকবেন ,তবে কোনোভাবেই অন্যের প্ররোচনায় পড়ে অন্যের কথা শুনে মেডিটেশন করবেন না যাতে করে আপনি নিজের লাভ না করে বরং ক্ষতির দিকে নিজেকে টেনে নিয়ে যাবেন ।সুতরাং মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তারপরে মেডিটেশন বা ধ্যান শুরু করবেন ।


আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে ।যে কোন ভুল ত্রুটি হলে অথবা কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন ,আমরা আপনাদের সুনির্দিষ্ট জ্ঞানের আলোকে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url