আজকের ইনফো https://www.ajkerinfo.com/2022/06/gorvoboti-mayeder-khabar-talika.html

গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা জেনে নিন


গর্ভধারণ প্রত্যেকটি মায়ের জন্য অনেক আনন্দের একটা সময় ,পাশাপাশি মূল্যবান একটা সময় ।প্রতিটি মা চেষ্টা করেন তার সন্তানের জন্য নিজেকে ভালো রাখতে ।এবং তার জন্য আজকে আমরা আলোচনা করব যে ,গর্ভধারণ কালীন সময়ে একজন মায়ের আসলে ঠিক কিভাবে জীবনযাপন করা উচিত বা গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা সম্পর্কে।

গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা

এই সময়টিতে একজন মায়ের অবশ্যই পুষ্টি দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । এ সময়টিতে একজন মা অবশ্যই তা পুষ্টির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ।তার শরীরের যত্ন নিতে হবে । কি খাওয়া উচিত হবে না টা লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সময়ের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।

সূচিপত্রঃ

গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ধাপ

গর্ভধারণের পর একজন মায়ের খাদ্য তালিকার জন্য তিনটি স্তরে ভাগ করা হয় । যেমন 0-3 মাস কে বলা হয় প্রথম টাইমেস্টার ,4-6 মাসকে বলা হয় দ্বিতীয় টাইমেস্টার এবং 6 মাস থেকে শিশু জন্ম হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়কালকে বলা হয় তৃতীয় টাইমেস্টার । এর ওপর ভিত্তি করে গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা সাজান হয়ে থাকে।প্রথম টাইমেস্টারে আপনি সাধারণত প্রেগনেন্সির আগে কি পরিমান খাবার খেতেন ঠিক সেই পরিমাণ খেলেই হবে ।

কারণ প্রথম দিকে খুব একটা বেশি ক্যালরি প্রয়োজন হয়না ,তবে দ্বিতীয় তিন মাসের আপনাকে অবশ্যই ক্যালরির পরিমাণ বাড়াতে হবে ।আপনার দৈহিক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে 400 থেকে 500 ক্যালোরি; আবার তৃতীয় টাইমেস্টারেও আপনি বেশি পরিমাণে ক্যালোরি যুক্ত করতে পারেন আপনার প্রয়োজন অনুসারে।

আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত হাত পা ঘামার চিকিৎসা

গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা

এবার চলুন জানা যাক একজন গর্ভবতী মা তাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় কি কি খাবার রাখতে পারেন, যা একজন মায়ের জন্য খুবই উপকারী এবং গুরুত্বপূর্ণ।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

যে সমস্ত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার আপনার শরীরের আয়রনের চাহিদা মিটাতে পারে সেগুলো হলঃ  ডিম, মাছ ,মাংস, সোয়াবিন, বাদাম বিভিন্ন রকমের উপকারী ব্রাউন রাইস ,সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার

পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা মেটানোর জন্য উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন ।ওটমিল ,বার্লি ,সিয়া সিড , কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম ,ব্রকলি ,ডুমুর ,কড়াইশুঁটি ,ভুট্টা ,স্ট্রবেরি ,আপেল ,কলা ও নাশপাতি ইত্যাদি।

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভবতী মায়ের জন্য অবশ্যই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজনীয় ।মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম ভেঙে শিশুর শরীরে যায় ।দুধ ,ডিম বিভিন্ন ডেইরি  প্রোডাক্ট  ,বাদাম প্রতিটি খাবার খেলে দেহে ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটে এবং এবং তা ভ্রূণের হাড়ের বিকাশে সহায়তা করে।

জিংক সমৃদ্ধ খাবার

পালং শাক ,কুমড়ো ,মাশরুম ,লাউ ইতালিতে প্রচুর পরিমাণে জিংক রয়েছে ।জিংক সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে স্বাস্থ্যকর স্নায়তন্ত্র গড়ে ওঠে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভবতী মায়েদের জন্য অবশ্যই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। ভিটামিন সি-তে ভরপুর মিষ্টি আলু ,বাঁধাকপি ,ফুলকপি ,ব্রকলি ,টমেটো ইত্যাদি যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রোটিন ,কেননা প্রথম তিন মাসে একজন মায়ের প্রোটিন খাওয়া অবশ্যই জরুরি ।প্রোটিনের উৎস হিসেবে হতে পারে মুরগির মাংস ,সোয়াবিন ডিম দুধ ,ইত্যাদি ।এছাড়া কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে ভাত ,রুটি , আলো ইত্যাদি ।

অনেকেই মনে করেন শিশুর ভালো হবে ভেবে বেশি ভাত খাওয়া শুরু করেন যা মোটেও ঠিক না ।কেননা অতিরিক্ত ভাত খেলে বাচ্চার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয় এবং পরবর্তীতে অনেক রকম রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

ওমেগা ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার

বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় যেন কোন রকম প্রতিবন্ধকতা না সৃষ্টি হয়, সেইজন্য গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকায় অবশ্যই ওমেগা ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে ।যেমন ওমেগা থ্রি ,নাইন ইত্যাদি যার উৎস কোন ধরনের সামুদ্রিক মাছ এবং অলিভ অয়েল।

আয়রনযুক্ত খাবার

গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা মিটানোর জন্য আয়রন যুক্ত খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজনীয় ,এছাড়া শিশুর রক্তস্বল্পতা এর মত প্রতিবন্ধকতা এবং শিশুর বুদ্ধি বিকাশে  খাবার হিসেবে  গরুর কলিজা ,বাদাম ,কচু জাতীয় খাবার খেতে পারেন।

আয়োডিনযুক্ত খাবার

আয়োডিনযুক্ত খাবার এর ভেতরে আয়োডিন লবন খাওয়া সবচেয়ে ভালো ।কেননা আমরা অনেকেই স্বাস্থ্যসচেতনতায় ভিন্ন ধরনের লবণ খেয়ে থাকি, যেমন পিংক সল্ট এছাড়া অন্যান্য লবণ ।তবে অবশ্যই মনে রাখবেন প্রেগনেন্সির ক্ষেত্রে আয়োডিনের উৎস হিসেবে আয়োডিন লবন খাবেন।

গর্ভবতী মায়ের কখন ওজন  বাড়ানো প্রয়োজন

গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থায় তিন ভাগে ভাগ করা হয় ।প্রথম তিন মাসে শরীরের তেমন একটা ওজন বাড়ে না এবং বমি ভাব হয় ।সুতরাং শরীরের হরমোন এর সাথে খাপ খাওয়াতে একটু সময় লেগে যায় তাই এই সময় ওজন না বাড়লেও সমস্যা নাই ,তবে পরের তিন সপ্তাহ আপনাকে ওজন বাড়াতে হবে ।

যেমন যাদের ওজন স্বাভাবিক থাকে তাদের ওজন বাড়াতে হবে 11.5 -16 কেজি পর্যন্ত ।যাদের একটু ওভার ওয়েট তাদের বানাতে হবে 7-11.5 ,আর যারা আগে থেকে একটু হেলদি তাদের ওজন বাড়াতে হবে 5-9 কেজি পর্যন্ত।

আরো পড়ুনঃ মেডিটেশন কখন করতে হয় ? মেডিটেশনের ক্ষতিকর দিক

সবশেষে বলবো গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকা পাশাপাশি নিজের শরীরের খেয়াল রাখতে হবে এবং নিয়মিত হাঁটাচলা ব্যায়াম পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং শরীরের যত্ন নিতে হবে। যাতে করে আপনার শিশুটির কোনরকম ক্ষতি না হয় এবং আপনি এবং আপনার শিশু সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকে।

আরো পড়ুনঃ How to gain weight? কিভাবে ওজন বাড়ানো যায়

আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে ।আপনাদের এ বিষয়ে কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাবেন, ধন্যবাদ।

পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

0 Comments

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন ??

অর্ডিনারি আইটি কী?