হাই প্রেসার রোগীর কি খাওয়া উচিত - উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চরক্তচাপ একটি দীর্ঘস্থায়ী ক্রনিক। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে থাকে তবে শুরুতেই যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা সঠিকভাবে তৈরি করা যায় তবে উচ্চরক্তচাপ একদম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
আজ কয়েকটি ইসলামী প্রশ্ন ও জবাব জাফরের জাতীয় পার্টিখাবার সম্পর্কে আলোচনা করবো যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য প্রতিদিন অবশ্যই আপনাকে খেতে হবে এবং এমন কয়েকটি খাবারের নাম বলব যা কখনোই খাবেন না; কিন্তু আমরা বেশি খাচ্ছি।তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক হাই প্রেসার রোগীর কি খাওয়া উচিত -
সূচিপত্র:
- হাই প্রেসার রোগীর কি খাওয়া উচিত নয়
- যে খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়
- হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
হাই প্রেসার রোগীর কি খাওয়া উচিত নয়
1.কফি
কফি খেলে সাময়িক সময়ের জন্য রক্তচাপ বেড়ে যায় তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের জন্য কফি খাওয়া একদম নিষেধ কারণ রক্তনালী সরু করে দেয় ফলে হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া রক্ত চাপের ফলে স্ট্রোক হতে পারে। তাই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কফি বা অতিরিক্ত চা পানের অভ্যেস একেবারে প্রতিদিন 1 থেকে 2 কাপ গ্রিন টি খেতে পারেন ।2.লবণ
উচ্চরক্তচাপের অন্যতম কারণ হলো শরীরের মধ্যে মাত্রা অতিরিক্ত সোডিয়াম জমা হওয়া। আর সোডিয়াম লবণ থেকে আসে। বিশেষত আমরা যে আয়োডিনযুক্ত পরিশোধিত সাদা লবণ খাচ্ছি এটাতেও সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি তাই খুব সীমিত পরিমাণে লবণ খেতে হবে।3.লাল মাংস
উচ্চরক্তচাপের লাল মাংস অর্থাৎ গরু, খাসি বা মহিষের মাংস একেবারে বাদ দিতে হবে; অথবা আপনি 10 দিন বা 15 দিন পর একবার খেতে পারেন, তাও 70 গ্রাম থেকে 100 গ্রামের বেশি নয় কারণ এই লাল মাংস মাত্রা অতিরিক্ত খেলে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়া, পাশাপাশি রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় যা হৃদরোগের কারণ হয়।4.চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার
উচ্চ রক্তচাপে চিনিযুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। কেক, পেস্ট্রি থেকে শুরু করে বাজারে পাওয়া যাওয়া জুস প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এগুলো মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তে ব্যান্ড খারাপ কোলেস্টরেল বাড়াতে থাকে এভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি ও উচ্চ রক্তচাপ বাড়ে।5.ডিমের কুসুম এবং মুরগির চামড়া
ডিমের কুসুম এবং মুরগির চামড়া বিশেষ করে ফার্মের মুরগির চামড়া ডিমের কুসুম খাবার ব্যাপারে সতর্কতা হল যে আপনি প্রতিদিন একটা ডিমের কুসুম খেলে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু সে জায়গায় যদি তিন থেকে চারটা ডিমের কুসুম খাওয়া হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ক্ষতি আছে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলেন প্রথমটার কুসুমসহ খাবেন বাকিগুলো সাদা মাংস খাবেন যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বা হাই প্রেসার থাকে।6.আচার এবং সস জাতীয় খাবার
আচার এবং সস জাতীয় খাবার যা আমরা খুব পছন্দ করি পুরি সিঙ্গারার সাথে খাওয়া কিন্তু এগুলো উচ্চ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এছাড়া যে কোন ফাস্টফুড খাবার অ্যালকোহল এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে।এবার আসুন আমরা চারটি খাবারের কথা জানবো যেগুলো আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ফেলবে-
যে খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়
জবা ফুলের চা
জবা ফুলের সাথে এমন অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি প্রপার্টিজ রয়েছে যা নিমিষেই আপনার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনে। কারণ এই পানীয়টি ব্লাড ভেসেল এর কর্ম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি শরীর খারাপ কোলেস্টরেল মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে, ফলে ব্রেইন এবং হার্টের কোন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একদমই থাকে না । যেহেতু চা পান করা আমাদের দৈনিকের অভ্যেস; তাই একবার যদি আপনি জবা ফুলের চা খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
জবা ফুলের চা বানানোর জন্য 2 কাপ পানি দিয়ে তিনটি জবা ফুলের শুধুমাত্র পাপড়ি মিশিয়ে নিন। তারপর তিন থেকে চার মিনিট ফুটিয়ে নিন; তারপর ফুটানো পানি পান করুন। যদি আপনার ডায়াবেটিস না থাকে তাহলে এতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
টক দই
এবার আসুন দ্বিতীয় খাবারটি যেটা আমাদের ব্লাড প্রেসার টাকে ইনস্ট্যান্ট অর্থাৎ তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। সেটা হচ্ছে কম ফ্যাটযুক্ত টক দই অর্থাৎ ঘরোয়াভাবেই দুধ দিয়ে তৈরি টক দই ।যা আপনার ব্লাড প্রেসার কে একদম নিয়ন্ত্রণ করে ফেলবে যেটাতে চিনি দিয়ে বানানো হয়। কারন টক দই ব্যাকটেরিয়াল ল্যাপটসকে ভেঙ্গে ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে।
উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা নিয়মিত টক দই খেলে হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আসবে।দুপুরের খাবারের পরে 100 গ্রাম টক দই নিয়মিত খাবেন। তবে এই টক দইয়ের সঙ্গে কোন প্রকার লবণ অথবা চিনি মেশাতে যাবেন না তাহলে উপকার থেকে অপকারই বেশি হবে।
মেথির পানি
তিন নাম্বার হল মেথির পানি, মেথির পানিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এজন্য প্রতিদিন রাতে এক কাপ পানিতে 1 চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন, তারপর সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ 1 লিটার পানি পান করার পর এই মেথিটি চিবিয়ে খান এবং সাথেই মেথি ভেজানো পানি পান করে নিন।
যদি প্রতিদিন আপনারাই মেথি খাওয়ার নিয়ম মানতে পারেন তাহলে উচ্চরক্তচাপের পাশাপাশি আপনার অন্যান্য অনেক রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার
সব ধরনের ভিনেগার এর মধ্যে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সবচেয়ে উপকারী পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। এই ভিনেগার শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম ও টক্সিন বের করে দেয় এতে এনজাইমের উপস্থিতি থাকায় এটি রক্তচাপ হ্রাস করে।হাই প্রেসার কমাতে উষ্ণ পানিতে 2 চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে তাতে আধ ঘণ্টা আগে পান করুন; তবে খেয়াল রাখবেন অ্যাপেল সিডার ভিনেগার কখনো ঘণ্টা আগে পান করুন।
তবে খেয়াল রাখবেন অ্যাপেল সিডার ভিনেগার কখনও ধাতব পাত্রে রাখবেন না এবং অ্যাপেল সিডার ভিনেগার কেনার আগে 5% এসিডিটি দেখে কিনুন সব বিষয় দেখে নেওয়ার পর আপনি খেতে পারেন।
হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
এছাড়াও আপনার যখন হঠাৎ করে হাই প্রেসার অনুভব হবে বা কোন হাই প্রেসারের রোগীর জন্য কাঁচা রসুন, পাকা কলা, ডার্ক চকলেট, লেবুর পানি,আদা খেতে পারেন প্রত্যেকটা খাবারে এমন উপাদান রয়েছে যা তাৎক্ষণিকভাবে আপনার রক্তচাপ কি একদম নিয়ন্ত্রণ করে ফেলবে।
পাকা কলা খাবেন কাঁচা রসুন খাবেন সিডার ভিনেগার অথবা অথবা অথবা জবাফুলের যা আপনার কাজে আসবে ছাড়াও যে বিষয়গুলি আপনি লক্ষ্য করবেন সেগুলো হলো-
- রক্তচাপ নির্ণয় এরপর নিয়ম মত চিকিৎসা নেওয়া পরীক্ষা করা
- খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন খাওয়া
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা
- বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা এবং ধূমপান না করা
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন